অক্সিজেনশূন্যতার প্রভাবে মস্তিষ্কের ভারসাম্যহীনতা নিয়ে ১৯৯৬ সালের ১০ মে জন ক্রাকাওয়ার এভারেস্টের চূড়ায় গিয়ে পৌঁছালেন। ৫৭ ঘণ্টা তিনি ঘুমাননি । ২৯,০২৮ ফুট (সাধারণত ওই উচ্চতায় আকাশে জেটলাইনার এয়ারবাস অবস্থান করে) উঁচু থেকে যখন তিনি বিপজ্জনক অবতরণ শুরু করলেন অন্য ২০ জন পর্বতারোহী তখনো নাছোড়বান্দার মতো নিজেদের ওপরের দিকে টেনে নিচ্ছিলেন। আকাশটা ঘন মেঘে ছেয়ে যাচ্ছিল, সে ব্যাপারে কেউ সচেতন ছিলেন না। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু জায়গা এভারেস্টে, প্রাণঘাতী ওই দিনে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল, তারই ভয়ংকর কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে ইনটু থিন এয়ার (১৯৯৭) বইয়ে। এ মর্মান্তিক কিন্তু শ্বাসরুদ্ধকর বর্ণনা পড়তে পড়তে পাঠক ক্রাকাওয়ারের সঙ্গে কাঠমান্ডু থেকে পর্বতের চূড়ায় এক দুর্ভাগ্যজনক অভিযানে হাজির হবেন, যেখানে আরোহীরা অহেতুক ঔদ্ধত্য, লোভ, ভুল মূল্যায়ন ও সম্পূর্ণ দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছেন; আটকা পড়েছেন পর্বতের ভয়ঙ্কর হিংস্রতার ফাঁদে। এটি কোনো কল্পকাহিনি নয়, বাস্তব ঘটনার অভাবনীয় রোমাঞ্চকর বর্ণনা। লেখকের বুদ্ধিমত্তা আর ঘটনাবলির অনবদ্য বিবরণের কারণে ইনটু থিন এয়ার শেষ পর্যন্ত একটি ভয় জাগানো থ্রিলারে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীব্যাপী ৩০ লাখ কপির বেশি বিক্রি হয়েছে এ বই ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম যখন শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে, সে সময় ২৯ বছর বয়সী ভারতীয় মেজর অশোক তারাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে বন্দী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারকে উদ্ধারের। সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় অশোক তারা সেখানে গেলেন এবং শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে মুক্ত করে আনলেন। দ্য লোন উলফ হচ্ছে অশোক তারার গল্প, সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে তাঁর বর্ণিল কিন্তু শান্ত জীবনযাপনের কাহিনি। এই সাহসী সৈনিকের নিরহংকার জীবনের শুরু থেকে ধাপে ধাপে অর্জিত বিচিত্র অভিজ্ঞতা নেহা দ্বিবেদীর এই বইয়ে ধরা পড়েছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ এশীয় ইতিহাসের মৌলিক ঘটনাগুলো তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরেছেন। অশোক তারার সাহসিকতার গল্প হলেও, এটা অন্ধকার থেকে আলোর সন্ধানে সংগ্রামরত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের গল্পও বটে।