বর্তমানে কিছু লোক আছে, যারা নিজেদেরকে ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারী দাবি করে। তাদের কেউ কেউ মনে করে, ঈসা আলাইহিস সালাম মানুষ ছিলেন না। তিনি মূলত নিজেই খোদা ছিলেন (নাউজুবিল্লাহ)। আবার কেউ কেউ বলে, তিনি ছিলেন আল্লাহর ছেলে (নাউজুবিল্লাহ)। এই লোকগুলোকে বলে খ্রিষ্টান। তারা ক্রুশকে সম্মান করে। ক্রুশের পূজা করে। কিয়ামতের আগে আগে ঈসা আলাইহিস সালাম আবার পৃথিবীতে নেমে আসবেন। মুসলমানদের পক্ষ হয়ে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন। তাদেরকে হারিয়ে দেবেন। ভেঙে ফেলবেন সব ক্রুশ। প্রমাণ করে দেবেন, খ্রিষ্টানরা তাঁকে নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছে। তিনি একজন সাধারণ মানুষ। তিনি আল্লাহও নন, আল্লাহর ছেলেও নন।
নুহ আলাইহিস সালাম তাদের সুন্দর করে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। বললেন-‘দেখ, আল্লাহ কাকে নবি করে পাঠাবেন-এটা তাঁর ইচ্ছা। কেউ চাইলে নিজে নিজে নবি হতে পারে না। কিছু সাধারণ মানুষ আমার কথা শোনে। আল্লাহর কথা মানে। তাঁরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা। অথচ তোমরা তাঁদের গরিব বলে বিদ্রুপ করো। জেনে রেখ, আল্লাহর কাছে ধন-সম্পদের কোনো দাম নেই। তোমরা যদি আল্লাহর কথা না শোনো, তবে তোমাদের ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা কোনো কাজে আসবে না। আল্লাহর আজাব এসে পড়লে কেউ তোমাদের বাঁচাতে পারবে না।’ নুহ আলাহিস সালাম আরও বললেন-‘আর তোমরা যে বলছো বাপ-দাদাদের কথা... বাপ-দাদাদের আমল থেকে কোনো কিছু চালু থাকলেই কি তা ঠিক হয়ে যায়? বাপ-দাদারা ভুল করলে তোমরাও কি ভুল করবে? দিনের পর জেনে-বুঝে একই ভুল করে যাবে? এটা কি কোনো যুক্তির কথা হলো?’ নুহ আলাইহিস সালামের কথা শুনে তাদের মুখ বন্ধ হয়ে গেল। তারা আর কথা খুঁজে পেল না। আর পাবেই-বা কী করে, তাদের সব যুক্তিই যে ভুল!
আবদুল্লাহ (রা.)-এর কবিতা শুনে উমর (রা.) চটে যান। ধমক দিয়ে বলেন-‘থামো! রাসূলুল্লাহর সামনে এ পবিত্র স্থানে কবিতা পাঠ?’ কিন্তু কবিতা তো সবার। সর্বজনীন। একজনের হৃদয় উৎসারিত হলেও সকলের হৃদয়গ্রাহী। কবিতা মায়ের বুলি। তাতে জাতপাত নেই। কাঠিন্য নেই। দর্শন নেই। প্রেম আছে। কবিতা আরশে মোয়াল্লার ভাষা। ফেরেশতার বিশুদ্ধ সুর। কাওসারের কুলুকুলু ধ্বনি। আয়িশা (রা.)-এর ঘরে মৌ মৌ গুঞ্জন। কবিতা রাসূলের মসজিদের আলাদা মিম্বর। ক্ষুরধার তার শব্দশৈলী। ইবনে রাওয়াহা (রা.)-এর তলোয়ার।
পৃথিবীতে বেঁচে থাকলে আল্লাহর পক্ষ থকে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা আসে। আসে বিপদ-আপদ। যত কঠিন বিপদই আসুক না কেন, আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আল্লাহর কাছে দুআ করতে হবে। অনেকে আছে, বিপদ-আপদ এলে অস্থির হয়ে যায়। ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। অনেকে বলা শুরু করে-‘হে আল্লাহ! কেন আমাদের এই বিপদ এলো? কেন আমাদের ওপরই এমন মুসিবত এলো?’ কেউ কেউ বলতে থাকে-‘আল্লাহ কি বিপদ দেওয়ার মতো আর কাউকে খুঁজে পেল না? আমি কী এমন পাপ করেছি যে আমার ওপরই বিপদ এলো?’ আইয়ুব আলাইহিস সালাম আল্লাহর নবি ছিলেন। তিনি কোনো গুনাহ করেননি, পাপ করেননি। কিন্তু তবুও আল্লাহ তাঁকে বিপদ-আপদ দিয়ে পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষায় তিনি পাশ করেছেন। তাই তো আল্লাহ তাঁর মর্যাদা অনেক অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন। এজন্য বিপদ-আপদ এলে আমরা বেশি বেশি আল্লাহকে ডাকব। তাঁর কাছে ক্ষমা চাইব। দুআ করব, যেন তিনি আমাদের বিপদ-আপদ দূর করে দেন। আমাদের রোগ ভালো করে দেন।
ইউরোপের রুগ্ন দেশ তুরস্ক হঠাৎ করেই বদলে গেল। উসমানি ঘোড়ার খুর আবার শব্দ করে ছুটতে শুরু করল। বিশ্বব্যবস্থার নতুন শক্তি হয়ে ওঠা তুরস্ক নিয়ে বাংলাভাষী পাঠকদের অনুসন্ধিৎসু চোখের চাহনি আমরা উপলব্ধি করতে পারি। বাংলাদেশী তরুণ হাফিজুর রহমান বদলে যাওয়া তুরস্কের ভেতর-বাহিরের স্কেচ এঁকেছেন।
দুআ বিশ্বাসীদের হাতিয়ার। তাক্বদীর বা ভাগ্যও বদলে যায় দুআর বরকতে। কিন্তু এটি কোন জাদুমন্ত্র নয় যে পড়ে দিলাম আর হয়ে গেল। এর জন্য প্রয়োজন বিশ্বাস, ধৈর্য, একাগ্রতা ও বিনয়াবনত আত্মা। দুআর বিভিন্ন দিক, নিয়ম, আদবকেতা সব কিছু নিয়ে খুবই প্রয়োজনীয় বই।