আঠার শিশিতে একটা তেলাপোকা পড়েছে। কী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবছেন গোপালচন্দ্র। রাজ্যের কীটপতঙ্গ নিয়ে তাঁর কারবার। ঘরে যিনি পোকামাকড় পোষেন, তাঁর ঘরে তেলাপোকার বাড়বাড়ন্ত থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক।বৈজ্ঞানিক গোপালচন্দ্র তেলাপোকাসহ আঠাগুলো ফেলে দিলেন ঘরের এক কোণে। কিছুক্ষণ পরে দেখেন একদল লাল বিষপিঁপড়া ভিড় জমিয়েছে আঠার চারপাশে। গোপালচন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করল ব্যাপারটা। দেখলেন, কয়েকটা পিঁপড়া আঠার ভেতর হাবুডুবু খাচ্ছে।আর কয়েকটা আবার দোনামোনা করছে কী করবে না করবে। বিজ্ঞানী মুচকি হাসলেন পিঁপড়াদের দুর্দশা দেখে। এরপর ভুলে গেলেন তেলাপোকা আর পিঁপড়ার কথা। আধাঘণ্টা পর আবার মনে পড়ল সে কথা। এ ধরনের ঘটনা কি আমাদের চোখে পড়ে? অথচ সারা বছর চারপাশে পোকামাকড়ের জগতে ঘটে চলেছে বিচিত্র সব ঘটনা। সেসব ঘটনা পাক্কা গবেষকের চোখে সারা জীবন দেখে গেছেন গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য। সেসব কীর্তি কাহিনি লিখে গেছেন তাঁর বিখ্যাত বই বাংলার কীটপতঙ্গতে। বিজন পল্লিতে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন পিঁপড়াদের কীর্তিকলাপ, পোকামাকড়ের লড়াই দেখতে। প্রজাপতির ডিম থেকে কিভাবে শুঁয়াপোকা হয়, সেই শুঁয়াপোকা কিভাবে খেয়ে খেয়ে নধর হয়, তারপর একসময় ঘুমিয়ে পড়ে পরিণত হয় মূককীটে, কিভাবে রেশম পোকা তন্তু বোনে—বনেবাদাড়ে, মাঠে-প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে সেসব দেখেছেন গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য।