চারজন মানুষ মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছে। একমুখী যাত্রা। যাওয়া যাবে কিন্তু ফেরা যাবে না। সেই দলে রয়েছে একজন বাংলাদেশি নারী, নাম সাবিনা আক্তার শিমু। মঙ্গলে অক্সিজেন নেই, পানি পাওয়া কঠিন, তেজস্ক্রিয় রশ্মির ভয় আছে। গাছপালা নেই। বৃষ্টি নেই। যাত্রাপথও সহজ নয়। ২৭০ দিন লাগবে শুধু যেতেই। সেখানে গিয়ে এই অভিযাত্রীরা থাকবে, এরপর ২৬ মাস পরে যাবে আরও চারজন। এভাবে মঙ্গলে গড়ে উঠবে মানববসতি। এক হাজার বছর পর মঙ্গল হয়ে উঠবে সুজলা-সুফলা। সাবিনা আক্তার শিমু মঙ্গলে যাত্রার আগে ঢাকায় এসে দেখা করল মা-বাবার সঙ্গে। 'ফিরে গিয়ে তারা রওনা হলাে ‘মার্স হােপ ১ নামের নভােযানে। বিপৎসংকুল শ্বাসরুদ্ধকর সেই অভিযাত্রায় অজানা শঙ্কার সঙ্গে আছে প্রেম, ভালােবাসা, হাসি-কান্না, ঈর্ষা-দ্বেষ। প্রিয় পাঠক, সাবিনা আক্তার শিমু ও আরও তিন অভিযাত্রীর সঙ্গে আপনিও চলুন প্রিয় এই পৃথিবী ছেড়ে।
কবি-সাহিত্যিকেরা বেশির ভাগই মজার মানুষ। হুমায়ূন আহমেদ, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ কিংবা নির্মলেন্দু গুণের রসবোধের কোনো তুলনা হয় না। তাঁদের রসিকতাগুলো দেশবিখ্যাত এবং চিরন্তন আনন্দ ও শিক্ষার উত্স। আবার রসবোধে খ্যাতি তেমন নেই, এমন মানুষও ঘটিয়ে থাকেন মজার মজার ঘটনা। শুধু মজার ঘটনা তো নয়, লেখক-কবিদের জীবনে ঘটে অনেক দুঃখের ঘটনা; আর সারাক্ষণই তাঁদের পোড়াতে থাকে শিল্পের আগুন। সমকালীন সাহিত্যের অনেক শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিককে কাছে কিংবা দূর থেকে দেখেছেন আনিসুল হক। লেখকদের নিয়ে আনিসুল হকের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা, কৌতুক, আনন্দ-বেদনা আর হাহাকারের গল্পগুলো ধরা থাকল এই বইয়ে। এই লেখাগুলো একই সঙ্গে স্মৃতিচারণা, সাহিত্যের উদ্যাপন, লেখকদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সাহিত্যিক মূল্যায়নের রেখাচিত্র।
ওদের মা কখনো গান করেননি কেন? মাকে ওদের মনে পড়ে না। শুধু চরাচর ভেঙে যখন জ্যোৎস্না নামে, তখন মায়ের শাড়ির আঁচলের গন্ধ পায় ওরা। টিনে ছাওয়া বাংলো ধরনের বাড়ি, বাড়ির সামনে বাগান, কাঁটামেহেদির বেড়া, কামিনী ফুলের পাগল-করা গন্ধ—এ-ই ছিল সত্তরের দশকের মফস্সল শহরগুলো। তেমনই এক শহরে দুই মায়ের সংসারে বড় হচ্ছিল চার ভাইবোন। চোরকাঁটাভরা মাঠে খেলা, বৃষ্টিতে তুমুল ভেজা শৈশব। টিউবওয়েলের নিচে গোসল, কয়লা দিয়ে দাঁত-মাজার শৈশব। কিন্তু ওদের মুক্তিযোদ্ধা বাবা সরকারি চাকরি হারান অন্যায়ের কাছে নতি স্বীকার না করার অপরাধে। কারাগারে যেতে হয় বাবাকে। বড় ভাই বাবুল সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন নিজের ভবিষ্যৎ বিসর্জন দিয়ে। কিন্তু এর চেয়েও ভয়াবহ সংবাদ দেন ছোটমা, হাসপাতালে শেষ শয্যায়। জানিয়ে যান, কেন মা কখনো গান করেননি। কে তাঁর কণ্ঠ থেকে গান নিংড়ে বের করে নিয়েছিল!
বাংলায় একটি প্রবচন আছে, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। আসলে, শিশুরাই জাতির বর্তমান। শিশু অধিকার–বিষয়ক প্রবন্ধ সংকলনের এ বইটি পাঠ করলে বাংলাদেশের শিশুচিত্র কিংবা শিশুদের বাংলাদেশচিত্র আমরা একনজরে দেখে ফেলতে পারব। সকল সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে, প্রতিবন্ধকতা জয় করে, ব্যর্থতাগুলো নিরসন করে আমরা কীভাবে শিশুদের বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব, সে ব্যাপারে বইটি ‘ডাইজেস্ট' বা ‘গাইড’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
আমি যুদ্ধে চলে যাচ্ছি। তোমাদের বললে তোমরা কিছুতেই রাজি হতে না। তাই না বলেই গেলাম। ২৫ মার্চ রাতে আমি নিজের চোখে মারা যেতে দেখেছি বাবুর আব্বাকে। দেখেছি, জগন্নাথ হলের মাঠে কীভাবে ছাত্রদের লাশ পড়ে ছিল। কীভাবে বস্তিতে আগুন দিয়ে বাচ্চা ছেলেমেয়েদেরও পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এরপর আর ঘরে থাকার কোনো মানে হয় না। তোমরা শান্ত থাকবে। এই চিঠি পুড়িয়ে ফেলবে। আমার জন্য দোয়া করবে। তমাল ও বন্যাকে আদর জানাবে। তোমাদের জন্য আমি দোয়া করব। যদি বাঁচি, ইনশা আল্লাহ দেশ স্বাধীন করেই ফিরব। তখন যদি বেঁচে থাকি, তাহলে দেখা হবে।
আমি, শহীদুল ইসলাম, কারও রূপ দেখে মুগ্ধ হব, ভাবিনি। এ কথাও তো সত্য যে প্রেমে মানুষ পড়ে, পতিত হয়; প্রেমে কেউ ওঠে না, আরোহণ করে না। আমিও হঠাৎ করেই পড়ে গেলাম। পড়ে গেলাম এবং ডুবে গেলাম।